Thursday, October 22, 2020

জুন-দুপুরের ম্যান্ডোলিন

                                    মা বলেছিলেন
তোরা আরেকটাকে কবে আনবি পৃথিবীতে?
আন!
দিয়ে যাস! ওটাকেও মানুষ করে তবে
যাব, যেখানে যাওয়ার।
 
মায়ের কোল থেকে মায়েরা
জন্ম নেয়। শহরের এই নোংরা কাদাগলি
শক্তির উপত্যকা হয় কবির
                             চাকা, তরোয়াল ও শোক
আঙুর গাঢ় হয়
                             প্রবল মাতৃত্বে বসুন্ধরার,
প্রবাদে বাঁধা পড়ে ঋতু,
জানালায় মাটির কলসে
                   থাকে জুন-দুপুরের ম্যান্ডোলিন।

বাইরে ঘাম,
                             কার্বন ঝরায়
অনেক গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে কাজে লাগা
লিথোর বলগুলো,
রাতের গুমোটে
আমাদের ভাষার পতন, গানের অর্থ চুরি যাওয়া ...

একটি দুধের চারা
নীরবে শিকড় ডোবায় অরাজক
                             দুরূহ প্রত্যুষে।
অতসী বড় হবে।
........................
কত বড় ছিলাম আমি, কত ছোট ছিল
বছর পনের ষোল আগে পৃথিবী।
সুদূর গ্রহের মত ছিল;
                             তার মাধ্যাকর্ষণ
পায়ে বোঝার মত ছিল।

মাধ্যাকর্ষণ আমার ডানা আজ।
                   আজ থেকে বছর পনের ষোল পরে
আরো অনেক ছোট হব আমি
পৃথিবী আরো অনেক বড় হবে।
তবু সে অনেক দিন!
শহর মূর্খতর হবে রোজ,
গ্রামের নেড়া ঘাড় হিংস্রতর হবে,
গঞ্জে বেরোবে স্থানীয় সাপ্তাহিক
                   গণধর্ষণের ক্ষতগুলো সারিয়ে উঠে বারবার।
মানচিত্রে বিদীর্ণ হবে হাত,
পতাকায় ছায়া ফেলবে শাসকের জ্বালানো আগুন।
অতসী আঁকবে মুখ রাতের প্রহরায়
বার্ণ্ট আম্বারে, হলুদে, ক্রিমসনে
দাঙ্গার রাতে দেয়ালের মত দাঁড়ানো
                             গলির মোড়ে তার সাথীদের।
.................................
পুরোনো ট্রেডল মেশিনের সাথে
রাত জেগে ফিরি
                   এনিবেসেন্ট রোডের মোড়ে অন্ধকার,
মাঝপথে মন্দিরের মাথায় আকাশ মেলে থাকা
                    অশত্থের পাতায় কান পেতে শুনি,
নীলচে হাওয়ার জোয়ার
                             উঠবার সময় হল কিনা।

আমি কি ক্ষয় করছি নিজেকে?
নাকি জয়?
প্রতিদিন?
বারবার প্রুফ পড়েও থেকে যাওয়া ভূলগুলো
শোধরাচ্ছি, বৃষ্টি ভেজা প্রেসের উঠোনের দিকে তাকিয়ে? 

[১৯৯২-৯৩]




No comments:

Post a Comment