Thursday, May 9, 2024

যুযুধান

এখনো অবাক করে সেই রাত, শমীর মৃত্যুর পর ফেরা।
ট্রেনে বসে জ্যোৎস্নায় নিজের ক্ষোভের সঙ্গে মুখোমুখি জেরা।
এবং ঈশ্বরকে ডেকে সাক্ষী করা, কোথাও যায়নি শমী, এই
বিশ্বচরাচরে থাকবে সৃজনাক্ষরে জীবনের, যদি সেই
অক্ষর তরঙ্গ হয়, শীর্ষে মানুষের গতির ফসফোরাস
আপনার ভাষায় বিশ্বাস দুঃখজ্বালার, গ্লানির করে নাশ।
 
আর শুধু শমী নয়, কতো মৃত্যু পেরোলেন শুধু খরদীপ্র
শিখা জ্বেলে সৃজনোৎসবের কতো আঘাত! সত্য অবিমিশ্র
সম্বল করে এগোতে শেখালেন, যুগের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে।
ছোট্টো রেণুকা তো যেতে নাহি দিব বলে নিজেই গেল হারিয়ে।
আর কর্মঠ মাধুরী? মাথায় বুলিয়ে হাত, গল্প শোনাতেন?
সৃষ্টিই মুক্তি! কালের সঙ্গে যুযুধান হয়ে জানিয়ে গেলেন। 

৬.৫.২৪

 

Monday, May 6, 2024

খোঁজ

কী খুঁজছি না বুঝেই শুরু করি খোঁজ।
গন্তব্য জানি না, পড়ি স্টেশনের নাম।
মাকে তো নয়ই, ঠিক যাচ্ছি কোথায়,
নিজেকেও জানাই না। সারণিতে দেখি
নামগুলো, রাতে এসে এগোনো ট্রেনের।
 
বাঃ, ওই তো দূরের, কম্র হাতছানি!
কবেকার থার্ড ক্লাসে স্থান খুঁজে নিই
প্রথম তোহফা জানলায় একা সিট,
দ্বিতীয়ও  জানলাই, তবে লম্বা বার্থ,
তৃতীয় মাঝের সিট, তাও না পেলে
ওপরের কোনো বাঙ্কে পা মুড়ে দূর!
কাগজ বেছাই নিচে, সারারাত জাগি।

সিগনালে থামে ট্রেন! পাথরে লাফিয়ে,  
উদ্ভিন্ন রোদের বাৎসল্যে মাখি ভোর!
পাশে এসে দাঁড়ায় যে রাতের সাথীটি,
দুটো ঢিলে ঢেউ ওঠে মেঘ ধরা জলে। 

২০২৩

Saturday, May 4, 2024

হকের রোজগার

মার্ক্সকে আমি আমার প্রথম টিউশনির
মাইনের মতো হকের
                 রোজগারে পেয়েছি।
ব্যাটা দিতেই চাইতো না।
হ্যাঁ, আমারই স্কুলের বন্ধু,
ওর ভাইপোদের পড়াতাম,
রোজ জলখাবার খাইয়ে টিরকাতো
কী ঘোরালো মাল, পয়সাটুকু দিতে!
 
ভাবলাম ঘুরবো দেশ!
অনেকেই ঘুরছে সেসময়!
হেঁটে, হিচহাইকে, আমরা সাইকেলে
দুপুরে অন্ধ্রে ঢুকতেই, হাইওয়ের বুকে
            কাঠ মাথায় বুড়ির, দাঁড়িয়ে 
কাপড় তুলে কর্কটরেখার ওপরে পেচ্ছাপ!
পেচ্ছাপসুদ্ধু কর্কটরেখাটাই যেন
এঁটে ধরলো শিরদাঁড়া।
এঁটে ধরলো দুহাজার মাইলে ভালোবাসার
ঘেমো সান্নিধ্য সব অচেনা ভাষায়,
অচেনা মায়েদের, চাষীদের, ভালো মানুষদের,
দিনান্তের মজুর আর রাতের ছাত্রদের

মার্ক্স আমাদের সবারই
নিজের মতো উপার্জন
ততোটাই, যতোটা কবীর!
             কবীরের সঙ্গে মার্ক্স?
             কোনো মিল হোলো?
মিলটাও উপার্জন ভাই!
লড়ে পাওয়া এই উপমহাদ্বীপ!
রাহুলজি বুদ্ধের সঙ্গে মার্ক্সের 
মিল দেখান। কিন্তু চেহারা দেখে আমার
চার্বাকের কথা মনে হয়
              আমাদের আদিবুড়ো।
চার্বাক অর্জনেও তো, সেই
আমাদের বিদ্যাসাগরকেই
ভাঙতে হলো যুগবিস্মৃতির করোটি!
----
লেনিনের প্রথম বইটা আমি
হিন্দিতে কিনেছিলাম।
কিন্তু, মার্ক্সের বাংলায়।
যেন মোটা মাথার মোটা হিসেব
              বিহারি বাঙালি,
মানুষের সঙ্গে কথায় লাগবেন
লেনিন, আর নিজের সঙ্গে কথায়
মার্ক্স!
বোকামি?
হ্যাঁ, তা বোকামি তো বটেই।
নিজের সঙ্গে কথা আর
মানুষের সঙ্গে কথা যে শেষে এক,
জীবন লাগছে বুঝতে!  

৪.৫.২৪