Monday, June 6, 2022

সোমেনের মৃত্যু

ঢাকায় শীত কেমন পড়ে?
মনে হয় একটা হাফ সোয়েটারে মাফলারে
কাজ চলে যেত সোমেনের – 
নিশ্চিত কয়েকটি ঠেকে তো যাওয়া রোজকার –
লেখকসঙ্ঘ, রেলকর্মী ইউনিয়ন, বিপ্লবী পাঠচক্র,
তাছাড়া চাকরির খোঁজ, হাটবাজার, লেখালিখি,
মেডিক্যাল পড়ার তো আর কোনো গল্প নেই তখন …
ঘরের কোণে, খাতায় শব্দ হতে থাকা জীবনগুলোর
কোনোটায় বসন্ত, শীত, গ্রীষ্ম, কোনোটায় বর্ষা ঢুকলেও
ঢাকার রাস্তায় বসন্ত কোন গাছে দেখা যেত প্রথম
আমি জানি না।

তখনো গান্ধিজি ডাক দেন নি ‘ভারত ছাড়’
কিন্তু মস্কোর সীমায়, দশ লক্ষ মৃতদেহ থেকে উঠে
প্রথম ঘুঁষিতে হিটলারের নাক ফাটিয়েছিল লালসেনা …
আটই মার্চের বিকেলে রোদে
সশস্ত্র ঘাতকেরা দাঁড়িয়েছিল এক তরুণ লেখকের প্রতীক্ষায়
যেমন পাঁচ বছর আগে এক কবির জন্য স্পেনীয় গ্রানাডায়; 
সে তো তবু একা ছিল, রক্তের সবুজ রহস্যের গায়ক,
সোমেন মিছিলকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে আসছিল … 

সোমেনের দিকে তাকাও,
সোমেনের মৃত্যুর দিকে তাকাও,
ঘাতকদের জিঘাংসার দিকে, 
শরীরের কাটা খন্ডগুলোর দিকে তাকাও
যেগুলো ছড়িয়ে পড়েছিল রাস্তার কাঁকরে, ঝোপঝাড়ে …

মৃত্যুই প্রমাণ করে আজ যাকে তিন দেশে পাই সে মৃত্যুহীন জনতার
চৈতন্য কত সরব ছিল তার দিনযাপনে –
কত স্পষ্ট স্বপ্ন, কোমসোমোলের স্বেচ্ছাশ্রমিকের মত
দেখত তার সুকুমার 
মৃত্যুই প্রমাণ করে বেয়াল্লিশে বাংলার ফাল্গুন
কতটা পলাশে ফুটছিল কতটা গুটিবসন্তের পূঁজভরা ফোড়ায়
সাতচল্লিশে বাংলাভাগে তার দ্বিতীয় হত্যায় আমরা চিনেছিলাম,
বাংলার চিরতারুণ্যের প্রথম লালতারা! 

৭.৬.২২ 



No comments:

Post a Comment