Wednesday, November 4, 2020

কনক

তুমি আজ সকাল থেকে হাসছ।
শাড়ি ছেড়ে
ছোটো বোনের সালোয়ার-কামিজখানা পরে
ফল্‌স লাগিয়ে লম্বা বেণী ঝুলিয়েছ।
মেয়েকে ঘুম থেকে তুললে,
ফুল তুলতে বেরুলে
আজ বৃহস্পতিবার,
পুজো-আচ্চা নিয়ে আমাদের
সাপ্তাহিক ঝগড়ার দিন।
 
আমিও বেরুলাম, পিছন পিছন।
মাঠ পেরিয়ে কোথায় যে চলেছ আজ!
ভাঙা, জনশূন্য বাড়িটার ভিতর নিঝুম বাগানে
তাও মেয়েকে নিয়ে,
আমি না থাকলে তোমার সাহস হত না!
 
মানুষ নেই তবু জল রয়েছে কলে।
ওতেই ধুয়ে নিলাম চোখমুখ।
তোমায় পেড়ে দিলাম টগর, করবী;
বললামঃ
কনকগুলো মাটি থেকেই তোলো,
গাছের নিচ অপবিত্র হয় না বোকা!
শিউলি তোলোনি কখনো?
 
বেরিয়ে
বেলগাছের সামনে এসে বললেঃ
কেউ না দেখলে নিজেই চড়ে যেতাম।
 
হুঁঃ, পাগল! কাঁটাগাছে চড়বেন!
আমি ও মেয়ে অবাক হয়ে দেখছি তোমার
এত সহজে নিজেকে ও সবাইকে
ফিরে পাওয়ার ক্ষমতা।
কে বলবে, নিছক আমারই দোষে
কি কষ্টে কাল রাত কেটেছিল তোমার!
 
একটু পরেই
স্কুল-কলেজ-অফিসের তাড়ায়
তালগোল পাকিয়ে যাবে সময়;
মে মাসের বেলা,
সকালেই চড়চড়িয়ে আগুন হয়ে উঠছে।

১৬.৫.১৯৯৬



No comments:

Post a Comment