বেলা একটু বাড়তে এত উত্তপ্ত নির্জন হত রেলগেট যেন ছায়াও শুষে নেবে পরোপকারীর। অদূরে গাছ ভরে নীল হত আম ... একটা ট্রেনের অপেক্ষায় কত মুহূর্তকাল – লোহার ওপর লোহা ঘষ্টানোর, জোড়গুলো লচকে ওঠার, গতির ধূসর আচ্ছন্নতায় থাকার, কিছুক্ষণ। বেলা একটু বাড়তে… এরকমই এক রেলগেটের ঘরে প্রথম শৈশবের যৌন – বিকৃতবিষ্ময়। এত সামান্য সমতল জমাট, সিমেন্টে ইস্পাতে এত দূরত্ব, এত প্রহার, মনে হত ডেকে উঠত তুষার – পোস্টমর্টেমের পর চিতায়, সেলাই করা বুক ...
যে’কটা ব্যস্ত রেলগেট সব উড়ালপথ হয়ে যাচ্ছে। এখন ক্রসিং পেরিয়ে ডানদিকে সার-বীজের
দোকানটার সামনে আর বলবনা দেখা করতে কাউকে। এলে, দোকানের পাশ
দিয়ে তাকে নিয়ে পিছনে প্রায় অদৃশ্য মাংসভাতের চালাটায় – তা সে ঝাল হোক না যতই মনে রাখার –
যাব না। কার পোষাবে টাউন হলে পৌঁছোতে, পুল পেরিয়ে ঘুরে গিয়ে
খাওয়ার অত হ্যাপা; সময় কম, সভা শুরুও করতে হবে তাড়াতাড়ি – শেষও করতে হবে চারটে চল্লিশের আগে।
ঘুরেফিরে তবুও যাই একা একা। নিচের ঢাকা পড়া বাজারপথে লেবু,
কচু, পানবাহার ছুঁয়ে অথবা ওপর দিয়ে গিয়ে সিঁড়ির কাছে অটো ছাড়ি। বা হেঁটেও পৌঁছে, দেখতে
দেখতে নামি।
রেলের তোলা দেয়াল, লোহার রেলিংএর এদিক ওদিক সন্ধান করি কোথাও
কেউ গড়েছে কিনা ধাপ, ভেঙেছে কিনা ইঁট, বেঁকিয়েছে কিনা পাত, কারো পাঁচিল বেয়ে হয়েছে
কিনা রাস্তা। টপকে গিয়ে দাঁড়াই লাইনগুলোর মাঝখানে ... একা নই, আরো অনেক থাকে আশেপাশে
আমারই মত ছিটেল। বেআইনে থাকে ঝুড়ি পেতে খুচরো বাজার, ট্রেন আসার বা পুলিশের তাড়া খাওয়া
অব্দি – এভাবেই বাঁচা অভ্যাস হয়ে গেছে আমাদের।
No comments:
Post a Comment