পুরোনো শহরের এই ছাতে
পুরো চাঁদের রাত
মনে পড়ছে জঙ্গলের
এক রাত
বহুবছর আগের
যখন চাঁদের নিচে জঙ্গল
জঙ্গলকে ডাকছিল আর
নির্জন বাঁকে
উঁচু ঝোপগুলোয় অদৃশ্য হতে হতে
বারশিঙ্গারা ডাকছিল
পিছনে পড়ে যাওয়া বারশিঙ্গাদের
এখনো কি বেঁচে আছে ওরা
হলুদ মাটির রাস্তা আর খরগোশ
মেহগনির ঘন গাছ
তীব্র গন্ধ ছড়ান শক্ত ঘাস
অনেকক্ষণ ধরে গোধুলি
শিশির
পাহারাদারের কুঁড়েঘর আর
তার ওপর সাতটি তারা
কেন মনে পড়ছে জঙ্গলের রাত
পুরো চাঁদের শহুরে এই রাতে?
ছাত থেকে নিচে তাকাই
ছড়াচ্ছে চাঁদের আলো মাঝরাত
দূর অব্দি
কোথাও থাকি
সবচেয়ে বেশি ফুটপাথগুলো টানে
খোলা মাঝরাতের পরের ফাঁকা ফুটপাথ
যেমন শৈশব থেকেই আমাতে ভরে রইল উঠোন
এবং রাত হতেই খোলা ছাত ডাকতে থাকল
কী আছে চাঁদের উজালায়
ছড়িয়ে পড়তে থাকা মাঝরাতে
এক অসহায়তা
যা পিষতে থাকে আমায় আর
কষ্টের মত এক আশা
শহরে বাসা বাঁধলাম
যেন পরিবারের ভাঙন তার ভিত
না পূর্বপুরুষেরা
না গ্রাম না জঙ্গল না পশু সাথে এল
কী মানে শহরে বাসা বাঁধার,
শহরেই শেষ হয়ে যাওয়া?
এক বিশাল উদ্বাস্তু শিবিরের দৃশ্যাবলি
সব দিকে তাদের ভবিষ্যৎহীন তাঁবু
কেমন সফরে আমরা শামিল
যে আমাদের চেহারা আজও ছিন্নমূলের মত
শুধু বলার জন্য কোনো শহর নিজের
কোনো বাড়ি নিজের
তার ভিতরেও হারিয়েই যেতে থাকি আমরা
লখনউএ খুব কম রয়ে গেছে লখনউ
এলাহাবাদে খুব কম এলাহাবাদ
কানপুর এবং বেনারস এবং পাটনা এবং আলিগড়
এখন এইসব শহরগুলোতেই
অনেক ধরণের হিংসা অনেক ধরণের বাজার
অনেক ধরণের পাগল
এ শহরগুলোর ভিতরে আশেপাশে
অনেক দূর বোম্বাই হায়দ্রাবাদ অমৃতসর
এবং শ্রীনগর অব্দি
হিংসা
আর হিংসার প্রস্তুতি
আর হিংসার শক্তি
তর্ক চলতে পারে না
হত্যা হয়
তারপরেও যে তর্ক চলে
তারও শেষ হয় হত্যায়
ভারতে জন্ম নেওয়ার
আমিও কোনো অর্থ পেতে চেয়েছিলাম
এখন আর সে ভারতই নেই
যাতে জন্ম নিয়েছি
কী আছে পুরো চাঁদের এই উজালায়
এই ছড়িয়ে পড়তে থাকা মাঝরাতে
যে আমার নিঃশ্বাস
লাহোর এবং করাচি এবং সিন্ধ অব্দি জড়ায়?
লাহোর কি রয়েছে একটুও?
কোন দেশে আছে এখন?
না ভারতে না পাকিস্তানে
না উর্দুতে না পাঞ্জাবীতে
প্রশ্ন কর জাতি-নির্মাতাদের
লাহোর কি গড়ে তোলা গেল আবার?
যেমন আজ এই সাঁঝবেলার
অস্পৃষ্ট সাদা রাত
এক সত্য
লাহোরও আমার সত্য
কোথায় আছে সেই
সবুজ আকাশের শহর বাগদাদ
খোঁজো তাকে
কোথায় আছে আরবে এখন?
প্রশ্ন কর যুদ্ধবাজদের
এই সাদা হতে থাকা রাতে
ওরা কি আবার তৈরি করতে পারবে বাগদাদ?
ওরা তো খেজুরের একটা গাছও অঙ্কুরিত করতে পারে না
বালিতে সেটুকুও হেঁটে চলতে পারে না
যতটা একটি শিশু উট চলে
যেন অন্তরীক্ষে
বালিয়াড়ি আর ঘুর্ণির সাথে খেলতে খেলতে
ওরা কি বানাতে পারে একটা উট?
একটা গম্বুজ একটা তরবুজ একটি উঁচু সুরাই
একটি সোঁতা
যেটা জলাশয় হল ধীরে ধীরে
একটি গলি
যেটা উঁচু দেয়ালের ছায়ায় শহরে ঘুরত ফিরত
আর গলিতে
মাথায় ফিরোজা রুমাল বেঁধে একটি মেয়ে
যাকে ওই গলিতে আর দেখা যাবে না কখনো
এখন ওকে মনে কর যদি
তাহলে ও মনে পড়বে
এখন তোমার মনে পড়াই ওর বাগদাদ
তোমার মনে পড়াই ওর গলি ওর বয়স
ওর ফিরোজা রুমাল
ভগত সিং যখন ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগোলেন
তখন অহিংসাই
ছিল ওনার সবচেয়ে দুরূহ উদ্বেগ
যদি কবুল করতেন
যুদ্ধবাজদের ন্যায়বিচার তাহলে
উনিও বেঁচে থাকতেন
সহ্য করে নিতেন
ধীরে ধীরে উজাড় হতে থাকা মরতে থাকা প্রতিদিন
লাহোরের মত
বেনারস অমৃতসর লখনউ এলাহাবাদ
কানপুর আর শ্রীনগরের মত
পুরো চাঁদের রাত
মনে পড়ছে জঙ্গলের
এক রাত
বহুবছর আগের
যখন চাঁদের নিচে জঙ্গল
জঙ্গলকে ডাকছিল আর
নির্জন বাঁকে
উঁচু ঝোপগুলোয় অদৃশ্য হতে হতে
বারশিঙ্গারা ডাকছিল
পিছনে পড়ে যাওয়া বারশিঙ্গাদের
এখনো কি বেঁচে আছে ওরা
হলুদ মাটির রাস্তা আর খরগোশ
মেহগনির ঘন গাছ
তীব্র গন্ধ ছড়ান শক্ত ঘাস
অনেকক্ষণ ধরে গোধুলি
শিশির
পাহারাদারের কুঁড়েঘর আর
তার ওপর সাতটি তারা
কেন মনে পড়ছে জঙ্গলের রাত
পুরো চাঁদের শহুরে এই রাতে?
ছাত থেকে নিচে তাকাই
ছড়াচ্ছে চাঁদের আলো মাঝরাত
দূর অব্দি
কোথাও থাকি
সবচেয়ে বেশি ফুটপাথগুলো টানে
খোলা মাঝরাতের পরের ফাঁকা ফুটপাথ
যেমন শৈশব থেকেই আমাতে ভরে রইল উঠোন
এবং রাত হতেই খোলা ছাত ডাকতে থাকল
কী আছে চাঁদের উজালায়
ছড়িয়ে পড়তে থাকা মাঝরাতে
এক অসহায়তা
যা পিষতে থাকে আমায় আর
কষ্টের মত এক আশা
শহরে বাসা বাঁধলাম
যেন পরিবারের ভাঙন তার ভিত
না পূর্বপুরুষেরা
না গ্রাম না জঙ্গল না পশু সাথে এল
কী মানে শহরে বাসা বাঁধার,
শহরেই শেষ হয়ে যাওয়া?
এক বিশাল উদ্বাস্তু শিবিরের দৃশ্যাবলি
সব দিকে তাদের ভবিষ্যৎহীন তাঁবু
কেমন সফরে আমরা শামিল
যে আমাদের চেহারা আজও ছিন্নমূলের মত
শুধু বলার জন্য কোনো শহর নিজের
কোনো বাড়ি নিজের
তার ভিতরেও হারিয়েই যেতে থাকি আমরা
লখনউএ খুব কম রয়ে গেছে লখনউ
এলাহাবাদে খুব কম এলাহাবাদ
কানপুর এবং বেনারস এবং পাটনা এবং আলিগড়
এখন এইসব শহরগুলোতেই
অনেক ধরণের হিংসা অনেক ধরণের বাজার
অনেক ধরণের পাগল
এ শহরগুলোর ভিতরে আশেপাশে
অনেক দূর বোম্বাই হায়দ্রাবাদ অমৃতসর
এবং শ্রীনগর অব্দি
হিংসা
আর হিংসার প্রস্তুতি
আর হিংসার শক্তি
তর্ক চলতে পারে না
হত্যা হয়
তারপরেও যে তর্ক চলে
তারও শেষ হয় হত্যায়
ভারতে জন্ম নেওয়ার
আমিও কোনো অর্থ পেতে চেয়েছিলাম
এখন আর সে ভারতই নেই
যাতে জন্ম নিয়েছি
কী আছে পুরো চাঁদের এই উজালায়
এই ছড়িয়ে পড়তে থাকা মাঝরাতে
যে আমার নিঃশ্বাস
লাহোর এবং করাচি এবং সিন্ধ অব্দি জড়ায়?
লাহোর কি রয়েছে একটুও?
কোন দেশে আছে এখন?
না ভারতে না পাকিস্তানে
না উর্দুতে না পাঞ্জাবীতে
প্রশ্ন কর জাতি-নির্মাতাদের
লাহোর কি গড়ে তোলা গেল আবার?
যেমন আজ এই সাঁঝবেলার
অস্পৃষ্ট সাদা রাত
এক সত্য
লাহোরও আমার সত্য
কোথায় আছে সেই
সবুজ আকাশের শহর বাগদাদ
খোঁজো তাকে
কোথায় আছে আরবে এখন?
প্রশ্ন কর যুদ্ধবাজদের
এই সাদা হতে থাকা রাতে
ওরা কি আবার তৈরি করতে পারবে বাগদাদ?
ওরা তো খেজুরের একটা গাছও অঙ্কুরিত করতে পারে না
বালিতে সেটুকুও হেঁটে চলতে পারে না
যতটা একটি শিশু উট চলে
যেন অন্তরীক্ষে
বালিয়াড়ি আর ঘুর্ণির সাথে খেলতে খেলতে
ওরা কি বানাতে পারে একটা উট?
একটা গম্বুজ একটা তরবুজ একটি উঁচু সুরাই
একটি সোঁতা
যেটা জলাশয় হল ধীরে ধীরে
একটি গলি
যেটা উঁচু দেয়ালের ছায়ায় শহরে ঘুরত ফিরত
আর গলিতে
মাথায় ফিরোজা রুমাল বেঁধে একটি মেয়ে
যাকে ওই গলিতে আর দেখা যাবে না কখনো
এখন ওকে মনে কর যদি
তাহলে ও মনে পড়বে
এখন তোমার মনে পড়াই ওর বাগদাদ
তোমার মনে পড়াই ওর গলি ওর বয়স
ওর ফিরোজা রুমাল
ভগত সিং যখন ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগোলেন
তখন অহিংসাই
ছিল ওনার সবচেয়ে দুরূহ উদ্বেগ
যুদ্ধবাজদের ন্যায়বিচার তাহলে
উনিও বেঁচে থাকতেন
সহ্য করে নিতেন
ধীরে ধীরে উজাড় হতে থাকা মরতে থাকা প্রতিদিন
লাহোরের মত
বেনারস অমৃতসর লখনউ এলাহাবাদ
কানপুর আর শ্রীনগরের মত
No comments:
Post a Comment