কার্তিকের শুরুতে
অঘ্রাণী ধানের দুধেল শীষগুলো
ভারি হয়ে আছে রাতশেষের শিশিরফোঁটায়
পরশ পেয়ে প্রভাত কিরণের
মুখর হয়ে উঠবে এদের রূপ, নয়নাভিরাম …
হাঁটতে বেরিয়েছি
‘পরমান’এর তীর ধরে
এগিয়ে যাচ্ছি খেতের আল হয়ে, সামনে
ফিরে পেয়েছি নিজের সেই শৈশব
বহু যুগের পর আজ অভ্যর্থনা জানাবে আমায়
শিশুসূর্য শরতের …
ঘন্টা-আধঘন্টা সে ঝিলমিল করবে পূর্বাঞ্চলগামী ‘পরমান’এর
দ্রুত-বিলম্বিত ঢেউগুলোয়
আর পাড়ের ভেজা মাটিতে
চলাফেরা করবে আমার এই অনাবৃত পা দুটো
রেখে যেতে থাকবে সাধারণ-হাল্কা ছাপ আর তারপর
নিজের ওপর হাসি পাবে আমার,
তক্ষুনি নেমে পড়ব জলের পাঁকাল কিনারে
ভারি খুরের চিহ্নগুলো নিজেদের দিকে আমায় ডাকবে
দুধেল মোষগুলোর স্মৃতিতে
অনায়াসে নুয়ে যাবে এই মাথা
এই দেখ, দূরের কোনো শিশমের বন থেকে
উড়ে এসেছে নীলকন্ঠ
চলে যাবে ওপর দিয়েই
কোথায় গিয়ে বসবে?
এদিকে পিছনের জোয়ান পাকুড়টার চুড়োয়?
নাকি, ওই বুড়ো অশ্বত্থের রঙ-চটা ডালটায়?
নাকি, উড়তেই থাকবে
পৌঁছোবে বিষ্ণুপুরের মাঝামাঝি
মন্দিরের উঠোনে বকুলের
ঘন পাতায় ঢাকা ডালপালার আড়ালে
হবে অদৃশ্য, আরাম করবে ওখানেই!
যেতে দাও,
এস তুমি আমার সাথে রত্নেশ্বর
মন ভরে আজ দেখব
উঠতে থাকা সূর্যের অরুণাভ পূর্ণচ্ছবি
কতদিন না জানি দেখিনি এই শিশু দিবাকর
এস রত্নেশ্বর, চরিতার্থ হোক চক্ষু আমাদের!
দেখ ভাই, তাড়াহুড়ো কোরো না
ফিরতে তো হবেই
কিন্তু এ কোথায় দেখা যায় প্রতিদিন
ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিই শয়ে শয়ে সকাল
যেন হারিয়ে গেছে জনপদের ছোঁয়া
(হায় রে আঞ্চলিক লেখক!)
আজ কিন্তু উদীয়মান সূর্যকে
অনেকক্ষণ দেখব, প্রাণ ভরে দেখব
বইতে থাকা জলের অর্ঘ অর্পণ করে
ভক্তিপূর্ণ কন্ঠে করব গুনগুন –
“ওঁ নমো ভগবতে ভূবন-ভাস্করায়
“ওঁ নমো জ্যোতিরীশ্বরায়
“ওঁ নমো সূর্যায় সবিত্রে
…।“
দেখ ভাই রত্নেশ্বর, তাড়াহুড়ো কোরো না!
ধীরেসুস্থে ফিরব
হারিয়ে দিয়েছে আমার আস্তিক
নাস্তিকটাকে আমার
সাক্ষী রইল তোমার মত নবযুবক ‘পোস্টগ্র্যাজুএট’
আমার এই ‘ডেভিয়েশন’এর!
না? মিথ্যে বলছি আমি!
হয়ত অস্বীকার করে যেতে পারি কখনও …
কই! আমি তো নোয়াইনি কখনো এই
মাথা!
কই! আমি তো কখনো দিইনি অর্ঘ্য
সূর্যকে!
তখন তুমি রত্নেশ্বর, মুচকি হেসে নিও আমার
মিথ্যায় …
১৯৬৪
অঘ্রাণী ধানের দুধেল শীষগুলো
ভারি হয়ে আছে রাতশেষের শিশিরফোঁটায়
পরশ পেয়ে প্রভাত কিরণের
মুখর হয়ে উঠবে এদের রূপ, নয়নাভিরাম …
হাঁটতে বেরিয়েছি
‘পরমান’এর তীর ধরে
ফিরে পেয়েছি নিজের সেই শৈশব
বহু যুগের পর আজ অভ্যর্থনা জানাবে আমায়
শিশুসূর্য শরতের …
ঘন্টা-আধঘন্টা সে ঝিলমিল করবে পূর্বাঞ্চলগামী ‘পরমান’এর
আর পাড়ের ভেজা মাটিতে
চলাফেরা করবে আমার এই অনাবৃত পা দুটো
নিজের ওপর হাসি পাবে আমার,
তক্ষুনি নেমে পড়ব জলের পাঁকাল কিনারে
ভারি খুরের চিহ্নগুলো নিজেদের দিকে আমায় ডাকবে
দুধেল মোষগুলোর স্মৃতিতে
অনায়াসে নুয়ে যাবে এই মাথা
উড়ে এসেছে নীলকন্ঠ
চলে যাবে ওপর দিয়েই
কোথায় গিয়ে বসবে?
এদিকে পিছনের জোয়ান পাকুড়টার চুড়োয়?
নাকি, ওই বুড়ো অশ্বত্থের রঙ-চটা ডালটায়?
নাকি, উড়তেই থাকবে
পৌঁছোবে বিষ্ণুপুরের মাঝামাঝি
মন্দিরের উঠোনে বকুলের
ঘন পাতায় ঢাকা ডালপালার আড়ালে
হবে অদৃশ্য, আরাম করবে ওখানেই!
যেতে দাও,
এস তুমি আমার সাথে রত্নেশ্বর
মন ভরে আজ দেখব
উঠতে থাকা সূর্যের অরুণাভ পূর্ণচ্ছবি
কতদিন না জানি দেখিনি এই শিশু দিবাকর
এস রত্নেশ্বর, চরিতার্থ হোক চক্ষু আমাদের!
দেখ ভাই, তাড়াহুড়ো কোরো না
ফিরতে তো হবেই
কিন্তু এ কোথায় দেখা যায় প্রতিদিন
ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিই শয়ে শয়ে সকাল
যেন হারিয়ে গেছে জনপদের ছোঁয়া
(হায় রে আঞ্চলিক লেখক!)
আজ কিন্তু উদীয়মান সূর্যকে
অনেকক্ষণ দেখব, প্রাণ ভরে দেখব
বইতে থাকা জলের অর্ঘ অর্পণ করে
ভক্তিপূর্ণ কন্ঠে করব গুনগুন –
“ওঁ নমো ভগবতে ভূবন-ভাস্করায়
দেখ ভাই রত্নেশ্বর, তাড়াহুড়ো কোরো না!
ধীরেসুস্থে ফিরব
হারিয়ে দিয়েছে আমার আস্তিক
নাস্তিকটাকে আমার
সাক্ষী রইল তোমার মত নবযুবক ‘পোস্টগ্র্যাজুএট’
আমার এই ‘ডেভিয়েশন’এর!
হয়ত অস্বীকার করে যেতে পারি কখনও …
কই! আমি তো নোয়াইনি কখনো এই
মাথা!
কই! আমি তো কখনো দিইনি অর্ঘ্য
সূর্যকে!
তখন তুমি রত্নেশ্বর, মুচকি হেসে নিও আমার
মিথ্যায় …
No comments:
Post a Comment