ভুল-বিচ্যুতি, অভেদ্য বর্ম পরে আজ
হৃদয়ের সিংহাসনে বসে।
ঝিকিয়ে ওঠে দূর অব্দি উদ্যত অস্ত্ররাজি
তার
তীক্ষ্ণ ধারালো পাথরের মত উত্তপ্ত দৃষ্টি;
দাঁড়িয়ে রয়েছে নতশির
পংক্তিবদ্ধ
নির্বাক, বিবশ অভিবাদনে সবাই,
অসংখ্য স্তম্ভ আর খিলানে প্রসারিত
আমদরবারে।
সামনে এক চেহারা,
অশান্ত জখমের কদর্য বাঁকা রেখায় বিক্ষত,
যাকে দেখে
কেঁপে ভাপিয়ে ওঠে হৃদয় ...
শৃঙ্খলিত ওই এক উচ্চদেহী,
ছিন্নভিন্ন পরিধান; দেখা যায়
বইতে থাকা রক্তের লাল দীর্ঘ দাগ।
সুলতানী দৃষ্টিতে দৃষ্টি রেখে নির্ভয়
নীল বিদ্যুৎ ছোঁড়ে নিঃশব্দ,
কয়েদ করে আনা ওই ইমান ... !!
নিঃশব্দ সবাই,
মনসবদার,
কবি আর সূফী,
অল্গজালী, ইব্নেসিন্না, অলবেরূনী,
সিপাহ্সালার, সর্দারেরা,
হতরব !! ... অস্বীকার করে সে,
লজ্জাজনক শর্ত বেঁচে থাকার,
অস্বীকার করে;
মাথা উঁচু করে জেদ অমান্যের ...
কেউ ভাববে তখন –
ঘন কালো ছায়ায় ঢেকে চলেছে সলতনৎ,
সুলতানী লৌহবর্ম নিছক মাটির,
বালির ঢিপি যেন – শাহেনশাহ,
শাহী দাপট, শুধু ঐ নৈঃশব্দটুকুই !!
(কিন্তু না:, ... সর্পদষ্ট যুগ),
বিচ্যুতি (আলমগীর),
আমার আপনার ভুলের নিকষ লোহার
বর্ম পরে হিংস্র,
হ্যাঁ, হিংস্র ওই আলিজাহ,
চোখ উপড়ে নেয় সত্যের,
উচ্ছিন্ন করে হৃদয়ের বসত সব
আমাদের ঘিরে ধরে
করে চলে নির্মূল, নিরর্থক …
ঝলমলে আতিশয্যময়
রাজকীয় গন্তব্যে তার, আটক আমরা সবাই !!
ইতিমধ্যে আমাদেরই ভিতর থেকে
বিচিত্র আর্তনাদের মত কেউ বেরিয়ে পালালো
ভরা আমদরবারে সামলে আমিও
জেগে উঠলাম;
থেমে গেল ভয়ে
পংক্তিবদ্ধ খাড়া সশস্ত্র স্বার্থপর
সাঁজোয়া চুক্তিসব,
মনে আলাদা চোয়াল, ভিন্ন দাড়ি নিয়ে
দুমুখোপনার শত অভিজ্ঞতায় প্রবীণ
দাড়িওলা সিপাহসালার, রাশভারী;
থেমে গেল ভয়ে !!
কিন্তু, ওদিকে ওই তরফে
বুরুজের ওপারে কেউ পৌঁছোলো,
কোথাও হারিয়ে গেল
আঁধার উপত্যকার গোল টিলা আর সঘন বৃক্ষসমূহে;
অনুভব হয়, ওই নামহীন
অজানা গিরিপথগুলোর এলাকায়
(সত্যের সোনালি মুখচ্ছবিগুলোর অস্পষ্টতায়)
জোটাচ্ছে লস্কর;
আমাদের পরাজয়ের শোধ নিতে আসবে
সঙ্কল্পধর্মী চেতনার রক্তপ্লাবিত স্বর,
আমাদেরই হৃদয়ের গুপ্ত স্বর্ণাক্ষর
আবির্ভাবে, রূপ নেবে ভয়ঙ্কর !!
No comments:
Post a Comment