১
নদীর অসুখ নদীর নয়,
দু’তীর ভরা বাসিন্দাদের বেঁচে থাকার মুখ।
নিসর্গ থেকে এত পেয়েছে মানুষ,
বলতে পারো লড়েই, কোটি বছর, তবু,
সেই কারণেই, বন্যা এবং খরাও আজ
ঋতুর নয়, বাঁধ প্রকল্পে ভুল,
সেচ বিভাগের চুরি,
সংসদের কানুন আর মালিককূলের লোভ।
নদীর মাথায় শকুন, সেও মাটিরই অসুখ।
২
নদীর অসুখ অন্যরকম, মাটির মত নয়।
মানুষ আগে নদীর নাম রাখে,
তারপর সেই নামে
চিনিয়ে দেয় মাটি, তার মুখর জীবন।
সব মাটির নদী আছে প্রতিদিনের –
তৃষ্ণানিবারণে, স্নানে, শ্রমের পর গানে,
ফসল কাটতে কাটতে দেওয়া কাস্তেগুলোর শানে,
বুকের ভাষার, হাতের পর হাতের প্রয়োজনে। তাই
নদীর অসুখ বলতে পারো মানুষেরই
নামের কোঁদল, গানের বেসুর, শানে গলদ,
ভাষায় অপহৃত, হাতের প্রয়োজন।
৩
সারাদিনের ব্যস্ততায় একটু ছুটি পেয়ে
আমরা এই মাটি আর নদীর মিলে আসি।
মেঘলা আলো পিছলে নামে ভেজা গুঁড়ির গায়ে।
নরম সময় চড়ুই পাখির বুকের মত গরম।
আমরা দুজন বসে থাকি পুরোনো এক ভাঙা দালান খুঁজে।
সামনে যায় বৃষ্টিকণার ঈষদচ্ছ অযুত ঘোড়সওয়ার
ফেনিল করে নদীর সবুজ বুক।
এই অবসর চিরকালীন – কতক্ষণের চিরকাল?
কোন দেশের এই অবসর? কোন যুদ্ধের পরের?
কোন ক্লান্তির পরের? তোমার মুখের দিকে তাকাই।
তোমার মুখটা এত প্রিয়। না হতো যদি?
প্রশ্ন করো,
“দেরি করলে কেন!” ...
কিভাবে আসতাম। ঘড়ি স্পষ্ট নয়।
গুলিবিদ্ধ রক্তও ভুল সময় দেয় যখন,
জখম দাগে মাথায়, শিশুর হাসিমুখ।
২১শে জুলাই ১৯৮৫
No comments:
Post a Comment