Monday, June 30, 2025

যুদ্ধবিরতি

চলো যাই, যুদ্ধবিরতি যখন, শান্তিতে এগোই
প্রাদেশিক দৈনন্দিনেঃ শিশুঘাতী জয়োৎসবে,
দেখি শাসকের আশীর্বাদধন্য ব্রাহ্মণ্য লাঞ্ছনা
মানুষের, কখনো মুসলমান, কখনো দলিত,
কখনো খ্রিস্টান বলে পথে,
                               এবং দূষিত আঁধার,
মহাজনী লাভধন্য বঞ্চনা-গাথার, সারা দেশে।
 
দেখি কতো নায়ক, অন্যায় নিবারণে নিয়োজিত,
মাল্টিপ্লেক্সে, ওটিটিতে; কতো নিঃসঙ্গ কর্মপথিক,
মানুষে, শাকসব্জিতে সাফল্য ফলিয়ে চলেছেন
পশুপ্রেমী দেশাধিপতি, অক্লান্ত, দুর্বৃত্ত-প্রবীণ!
 
নতুন আইনে অপরাধ সম্মিলিত প্রতিরোধ!
সে চাষি পাবে না সিলোর টিকিট, শ্রমিক জীবিকা।
তিন দশকে বুঝিই নি কতোটা রক্তে আমাদের
প্লাজমা চেটে খেয়ে গেছে উন্নয়নী যুদ্ধবিরতি।  
 
২৭.৬.২৫

অস্থির ঘুমের স্বপ্ন

অস্থির ঘুমের স্বপ্ন রেখে যায় অবসন্ন মন
সে জগতে সব বাড়ি একতলা, রাস্তা ভরা জল
চেনা সব নাম, ডাকলে দরজা খুলে সাড়া দেয়
কেউ দূরে থাকে, মনে পড়ে কথা দিয়েছি, আসব
 
আবছা আঁধারে নিজের বলে পাই না কোনো বাড়ি
একা একা সাইকেল নিয়ে পৌঁছে যাই বাইপাসে
দেখি সেখানেও ইঁটে ঘাসে মানুষে ঘিঞ্জি রাস্তাটা
ঐ তো বাড়ি আমার কিন্তু থামি না, আরো দূরে যাই
 
অথবা বাঁদিকে রেললাইন পেরিয়ে আরো চেনা
অন্য পাড়ায় কিন্তু সেখানে এখন থাকে না কেউ
ক্রসিং ধরি, রিক্সা ধরি সবশেষে এতদিনকার
বেঁচে থাকাটারই এ্যাসিড-খাওয়া ছবি হয়ে ঘুরি   
 
সকালের আলো খুব ভালো করে এঘরে আসে না।
মানা করি তবুও দুটো বাল্ব জ্বালিয়ে যান স্ত্রী।
 
২৪.৬.২৫

অনিলদা

এমনকি কলকাতায় যাওয়াও, হাওয়াই চপ্পলে, 
মানে দরকার পড়লেই হাজির, হাতে ফাইল
অনিলদার হাসিতে ছেড়েছি;
                                    এই দ্যাখ্‌, কিভাবে
এসেছে! পিঠে হাত খেয়েছ? ওকে নিয়ে যা, এ্যাই!
 
গড়ার তাজা নেশায়, নতুন লড়াকু সংগঠন,
ঝাড়খন্ড সুদ্ধু সেদিনের পুরো বিহার চক্করে,
ডাকলেই চলে আসতেন বিচক্ষণ মানুষটি!
তাঁরটাই ছিল প্রথম আমাদের শ্রীহীন করে 
অবসরপ্রাপ্তি নাগালের বাইরে যাওয়া হঠাৎ!
তারপর আর কখনো পাইনি সে-মাতৃত্বস্বাদ।
 
অনেককিছু এল-গেল, সগর্বে সভায় বলেছি
অনিলদার সংগঠন! তাঁরই শিষ্যসমাহার!
কালচারটা লড়াইয়ের রক্তে থেকে যায় বস্‌!
মুখে মুখে ঘোরে মানুষকে কাছে টানার আখ্যান!
 
২৩.৫.২৫

নিঃসঙ্গ মানুষ

নিঃসঙ্গ মানুষ দুটো এক হলে নিঃসঙ্গতা যাবে
নিশ্চয়তা নেই। দ্বিগুণও হতে পারে। ফল হবে 
দুজনেই দুটো করে নিঃসঙ্গতা বইবে এবার।
একটি তো পরিচিত, আদরও করা যায় বসে,
অন্যটি অপরিচিত, খিঁচিয়ে আসতে পারে দাঁত।
 
তাদেরকে বরং বলা যাক, কটি পোষ্য নিয়ে এস
পশু, শিশু, চারা, সরীসৃপ, অথবা অন্যান্য কাজ,
যেগুলোতে ভোগান্তি আছে দিনরাতের ভেবে দেখ
গ্রহটির নিঃসঙ্গতা দূর করে, বন্ধু আছে কেউ?
আমরা তো আজও জানিই না বন্ধু কিনা গ্রহটির!
 
নাকি শত্রু? কর্ষণ ধর্ষণ হয়ে চলে লালসায়।
এবং সে প্রমত্ততা একই হাল করে জীবনের!
 
একটা ভালোবাসা ধরে রাখতে পারে না মানুষ
আর বড়ো বড়ো কথা, কবিতা-গবিতা, উপদেশ!
 
২৪.৬.২৫

ডি-জি

পেয়েছি অনেক আপনার সঙ্গলাভে কমরেড!
ভিত্তিটাই ধারালো কর্ষক ছিল, সঙ্ঘজীবনের
"দেশটা অনেক বড়, বিশ্বও জটিলতর আজ,
সমূহে নিবিড় পাঠ, আলো দেবে পথটা চেনার"!
 
সবারই রাজনৈতিক জন্মে এক কম্যুন-জীবন
ভাস্বর থাকে তারুণ্যে। আমিও নেতৃত্বে আপনার,
যৌবনের দশকটা গানে, স্বপ্নে, তর্কে ভরালাম!
 
গ্রামে গিয়ে মাটির দোতলা ঘরে দুরাত্তিরসভা,
অসাধারণ সব মানুষ, গুপ্ত পত্রিকা, সাইক্লো;
অথচ নানান প্রশ্নে বাড়ছিল অন্তরে বিরোধ!
 
যে কলহে বিচ্ছিন্ন হলাম, শতাব্দির শেষ পর্ব
নাব্যতা বাড়ালো তার; রক্তঝড়ে পেলাম তির্যক,
লেনিনের হাসিচোখ সংগ্রামের ডায়ালে আহ্বান!
দু:খ যে রাজপথে কখনো হলাম না কাঁধে-কাঁধ
 
১৪.৪.২৫