Sunday, July 20, 2025

আটা মাখা

সকালে উঠে ভালোলাগার একটা কাজ তো চাই মানুষের!
আমার আটা মাখতে ভালো লাগে। অর্থাৎ, কাজটা কোনোদিন,
যদি হাতে পাই জমিয়ে লাগি হেঁসেলে।
 
কতো ভ্যাবলা থাকি ছোটোবেলায়, আটা, ময়দা, সুজি যে সব
গমেরই রূপ, জানতে সময় লেগেছে। সেদিন বেঙালুরুর
দোকানে জানালো, সুজিও তিন রকম।
 
রেশনের গম বেছে, ধুয়ে, শুকোতে দেওয়া হতো; পেষাইকলে
দেখতাম আটার ঝর্ণা! অনেক পরে বুঝি, দূরে কোনো গ্রামে
পেষাইকল-মালিক কেন মহাজন।
 
তৈরি গমক্ষেতের শিরশিরানি ভিন্নজাত; গল্পগুলো যেন
নীল নিরুদ্দেশ ছুঁয়ে দানা বাঁধে। ধানক্ষেতের শিরশিরানি
ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভিতরের দিকে টানে।
 
আকছার স্বল্প আলো ঢোকে ঘরে, আধো অন্ধকারে বসে মাখি,
ঈষদুষ্ণ আটায় ডোবা আঙুলে অল্প জল ঢালি  টের পাই
আসছে মা-দিদারা তাবৎ পৃথিবীর।
 
বোন ও বৌদিরা, দুষ্টুমুখ! দাঁড়িয়ে পড়েছে আমার পিছনে
কতো ভাষার উনুনে গুনগুন, গমের স্বপ্নভূমিতে যেন;
হিন্দুকুশের দুপার ভরে হয়ে উঠি।
 
২০.৭.২৫  



সময়ে যেটুকু করার ছিল

কী লাভ হলো?
ঠিক যে সময়ে যেটুকু করার ছিল না-করে
যে প্রশ্নের ঘাড়টা ধরার ছিল না-ধরে
এতগুলো বছর
বাতেলা মেরে কাটিয়ে যে দিন বদলাবেই,
আজ বসিয়ে যুদ্ধ খাওয়াচ্ছি
ফুল, হাফ, ডবলহাফ, লাল, চিনিছাড়া,
সঙ্গে বিরাম আর শান্তিবার্তা বিস্কুট
সব নিজেদেরই পকেট থেকে খসছে!
 
এমনও নয় যে আগের মত বলব
কোনো যুদ্ধের পক্ষে নেই! হাঃ,
শালা সবকটা যুদ্ধের কোনো না কোনো পক্ষে
একটু করে আছি।
অথচ যে যুদ্ধে বস্তুতঃ আছি,
শুধু সময়ের সঙ্গে তাল রাখতে তার
মূলপাঠে কতো যে রদবদল করছি প্রতিদিন
তার হিসেবটুকুও রাখছি না যে
রাতে নোটবুক নিয়ে বসব।  
 
ভিডিওটা বন্ধ করো!
অতো অস্ত্রবিশেষজ্ঞ হয়ে দরকার নেই।
ভাবো তো?
কোথায় কোথায় ফাঁকিগুলো
কখনো নিয়মরক্ষা আর কখনো
সাফল্যের জিগিরে চাপা দিয়ে এগোলাম
গত তিনটে দশকে? 
 
 
 
………
এ নাহলে খেলা?
একে অন্যেকে হারিয়ে দেওয়ার যুদ্ধে
ওরা একে অন্যেকে জিতিয়ে দিচ্ছে
বিক্রি বাড়ছে অস্ত্রের,
দাম বাড়ছে জিনিষের,
আরো সস্তা, আরো ক্ষুদ্র, আরো বর্বর হচ্ছে মানুষ
আর আমরা?
সবাইকে জিতিয়ে দেওয়ার যুদ্ধে
ওগুলোর কোনোটাকেও
হারাতে পারছি না।

১৮.৬.২৫

ভিমলিপতনম ২০১৫

উঁহ! এত গোমড়া কেন?
হাসুন! বলেছিলাম।
বলায় শুধু অভ্যাসটা ছিল
                 ছবিতে হাসিমুখ তোলার।
তীরের বালিতে সাইক্লোনের ধ্বংসচিহ্ন ছড়িয়ে থাকলেও
মাথায় ছিল না প্রেক্ষাপট।
 
জিজ্ঞেসও করিনি, ঝড়ের দিনগুলোয়
কেমন ছিলেন তিনি, তাঁর পরিবার, এলাকার মানুষেরা।
যদিও স্পষ্ট ছিল যে তাঁর দোকানঘরটাও
জলে ক্ষয়ে বেরিয়ে আসা কাঠ,
রঙের পোঁচ, নতুন প্লাস্টিক।
বালিতে গেঁথে ছিল ভাঙা মৎস্যকন্যা,
ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া কোনো পাকা ঘরের
অবশেষটুকু।
 
সমুদ্রের পটভূমিতে তিনি হেসেছিলেন।
পায়াওয়ালা ছোট্টো গুমটিটার
আলোআঁধারে আকাশি শাড়িতে বসে,
শঙ্খ, ঝিনুক দিয়ে গড়া বাহারি সব জিনিষের মাঝে
 
এত দূর! আবার গিয়ে ঝালিয়ে নেওয়া যাবে না
এক দুপুরের ক্ষণিক আলাপ।
আর সেই অক্ষমতায় যেন এ্যালবামে
দিনে দিনে সংক্রামক হয়ে উঠছে হাসিটা।
 
৯.৬.২৫